২০১৭ সালে আকস্মিক বন্যায় উত্তরাঞ্চলের জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। আমাদের সদস্যরা তড়িৎ সিদ্ধান্ত নেয় উত্তরাঞ্চলের মানুষদের সহয়াতার জন্য। এদিকে...



 ২০১৭ সালে আকস্মিক বন্যায় উত্তরাঞ্চলের জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। আমাদের সদস্যরা তড়িৎ সিদ্ধান্ত নেয় উত্তরাঞ্চলের মানুষদের সহয়াতার জন্য। এদিকে ফান্ডিং অত ছিল না। যার ফলে আমরা বেড়িয়ে পরি ফান্ড কালেকশনে। বন্ধু-বান্ধব, আত্মীয়-স্বজন, পাড়া-প্রতিবেশি, দোকানপাট এমনকি স্কুল থেকেও ফান্ড কালেক্ট করি আমরা।

স্কুলগুলো বেশ বন্ধুবৎসল ছিল। ব্যাতিক্রম ছিল না তা নয়। তবে বেশিরভাগ স্কুলের কর্তৃপক্ষকে আমরা আমাদের কথা বোঝাতে সমর্থ হয়েছিলাম।

সদস্যের হাতে কালেকশন বক্স

পায়ে হেটে এক স্কুল থেকে অন্য স্কুলে যেতে যত না কষ্ট হয়েছে, তার চেয়ে বেশি আনন্দ পেয়েছি সবাই মিলে ঘোরাঘুরি হওয়াতেও।

হাঁটা কষ্টের, একত্রে হাঁটা আনন্দের

খুনসুটিও হয়েছে বেশ।
সাব্বির টুপি পড়েছিল


সাজন খুলে নেয়!

যাইহোক ফান্ড কালেকশন শেষে জিনিসপত্র কেনার পালা। ওহ আচ্ছা, বলাই তো হয় নি। বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের চট্টগ্রাম সমিতি আমাদের সাথে যোগ দেয়ায় একটা হ্যান্ডসাম ফান্ড দাঁড়ায়। এ দিয়েই কেনা হয় শুকনা খাবার, নিত্য প্রয়োজনীয় ঔষধ ইত্যাদি। আমরা প্যাকিংয়ের কাজে লেগে যাই।

ঔষধ


মোমবাতি ও ম্যাচবক্স

শুকনা খাবার

সৌমিক মুন ঢং করে দাঁড়িয়ে থাকলেও ভালো পরিশ্রম করেছে অবশ্য!


প্যাকিংয়ের সময়ও সাথে ছিল চট্টগ্রামের বন্ধু মাসুম। তাদের কো-অপারেশনের জন্য ধন্যবাদ না দিয়ে পারা যায় না।








সবাই মিলে শেষ করে ফেলি প্যাকিং। বরাবরের মতো মেপে মেপে প্যাক করা হয় সবকিছু। এবার ত্রাণ নিয়ে যাবার পালা। ময়মনসিংহ জংশন রেলওয়ে স্টেশন থেকে দেওয়ানগঞ্জের উদ্দেশ্যে সদলবলে রওনা হই আমরা।






নৌকা ভাড়া করে চরের দিকে রওনা হই। খুব উৎফুল্ল সবাই যদিও গিয়েছি মালগাড়ি দিয়ে।
সেখানে গিয়ে আমরা থ। সবাই মুখিয়ে ছিল আমাদের মতো ত্রাণ নিয়ে আসা লোকদের জন্য। এক জায়গায় নৌকা ভিড়াতেই অনেক লোক জড়ো হয়ে গেল। তাদের সিরিয়াল ধরে দাড় করানো হয় প্রথমে।

কিন্তু সেটা বেশি সময় স্থায়ী হয় নি। গোলমাল বেধে যায় কিছুক্ষণ পরেই!

নৌকা জেঁকে ধরে সবাই

আমরা একটু ভড়কে গিয়েছিলাম। এরিমধ্যে কেউ কেউ বলাবলি করেছিল ইউ.এন.ও-র ত্রানের নৌকা ডুবিয়ে দিয়েছিল লোকজন! আমরা ভয়ের সাথে সাথে খুব কষ্টও পাই তাদের দূরাবস্থা দেখে। এই জায়গা সামলে অন্য জায়গায় পাড়ি দেই। অবস্থা আরো বেগতিক।

ত্রানের বোট দেখেই নদীতে লাফিয়ে পরে সবাই

আমরা কোন চরের কাছাকাছি যেতেই এ দৃশ্য দেখা যায়। লাফিয়ে নৌকার কাছে এসে কেউ বলে নৌকা ডুবিয়ে দেবে। তাই আমরা কোন এক জায়গায় নৌকা স্থির না রাখার পরিকল্পনা করি।

ছেলে-বুড়ো সবাই চরম সাতারু!

শুনতে খারাপ শোনা গেলেও বেকায়দায় পড়ে আমরা ত্রানের ব্যাগগুলো তীরের লক্ষ্য করে দিকে ঢিল
দিতে থাকি। খুব অল্প সময়ের মধ্যে শেষ হয়ে যায় সব প্যাকেট।

ব্যাগগুলো ভেসে থাকায় সুবিধা হয়েছিল অবশ্য

যে কারোর বুক হাহাকার করে উঠবে এ দৃশ্য দেখলে

বন্ধু তৌহিদ সরণের ক্লিকে এসছে বেশিরভাগ করুন দৃশ্যগুলো। আমাদের ধারণা ছিলনা এতো কম হবে এতোগুলো প্যাকেট! একই সাথে একটা কষ্টকর, রোমাঞ্চকর দিন শেষ হয় হতাশা দিয়ে। ইশ, আরো কয়েকশো প্যাকেট আনতে পারতাম যদি!